অহনা মজুমদারের কবিতা

১. দেখো! প্রস্থান তুমি করতেই পারো

এটা তোমার আইনত যাযাবরতা।

আর, আমার প্রেম?

আমার প্রেম বুঝি নাক ছিটকানো?

বর্বরতা?

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা?

বৃষ্টি আমার শহরের অলিতে-গলিতে এসে ভিড় জমিয়েছে কিনা, আমি জানি না।

তবে আমি একখানা হারানো বিজ্ঞপ্তি সেঁটে দিয়েছি আমার হৃদপিণ্ডে!

আমি দূর দূর ঘুরে, ঝর্ণার ফাঁকে লেপ্টে নিয়েছি নিজেকে।

আমি আমেজ হারিয়ে, পাহাড়ের কোণ ঘেঁসে চুষে নিয়েছি, তোমাকে!

এ যেনো অমৃত!

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এতো রোগ থাকতে, কেনো তোমার লালসায় নিজের মস্তক এঁকে দিয়ে- নসিবের দোহাই দিচ্ছি?

হে, কপটচারী!

আপনি কোন ফ্যাসিবাদের নুন খেয়ে আমার উঠনে জ্বালিয়েছেন মোমের উনুন?

কয়লা হওয়া কি যে সে কথা?

আপনি ভাবুন! ভাবুন, কতটা নির্দয় আপনার টেস্টোস্টেরন!

কতটা খামোশ, হাওয়া নিঙড়ানো।

আপনি ভাবুন!

দেখুন, আবার বলছি-

প্রস্থান আপনি করতেই পারেন, এটা আপনার জিনগত যাযাবরতা!

২. পুরো পরিবেশটা থমথম!

ঝড় হবে বোধহয়।

নাকি তুমি আসবে?

পৃথিবী ভর্তি ঠান্ডা বাতাস, গাছে গাছে সংঘর্ষ

নিউরনে পোকার জটলা ছাড়ানো।

এসব কি তুমি আসায় আগাম বার্তা নয়?

অতঃপর বৃষ্টি!

কানে বেজে উঠছে, ঝুম ঝুম বৃষ্টির শব্দ।

আমায় উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সব নির্মমতার কোলাহল।

আমি ভাসছি! আমি ভাসছি!

এ যেনো, নারায়ণ এলো ঘরে।

মা বোধহয়, মুখ মিষ্টি নিয়ে ব্যাস্ত

না হয়, হাউমাউ করে খোদার দরবারে চিনি কলা দেওয়ার লোভ!

খোদা? তুমি কি চিনি-কলা খাও?

এবার বলো? আমায় ভাসিয়ে নিবে কোন দুয়ারে?

আমায় শুকাবে কোন বাসনের উপরে?

রোদ নেই! সমসত্ত্ব মিশ্রণ নেই!

আমায় শুকাতে দিবে কোন দড়ির দাঁড়িপাল্লায়?

সাথে কি কোনো লাল নীল বা সাদা কাপড় আছে?

যাইহোক বাদ দেও। বহুদিন বাদে, দুঃস্বপ্নে ভেসে বামন হয়ে চাঁদ হাতড়ানোর শখ হচ্ছিল।

আসো! বৃষ্টি শুনি।

জীবনানন্দ শুনি! কদম শুনি!

এসো, তোমার হাত ধরে মহাশূন্যে বৃষ্টি প্রণাম করি

এসো, পুরো শরীর ভিজিয়ে, রং ডং এ মাতি!

ঝুম ঝুম বৃষ্টি! এসো জড়িয়ে ধরে জীবাত্মার বিসর্জন দেই।

বৃষ্টি ফোঁটার ফাঁকে ফাঁকে একে ফেলি, শুষ্ক ঠোঁটে চুমু।

এসো, তোমার হাত ধরে ঘুরাই জঘন্য পৃথিবী।

দেখো! দেখো! এ পৃথিবী তোমার আমার।

ষোলোআনা!

অর্ধেক সংসারে আর অর্ধেক হোটেলে রুটি, ডালের মস্তকে।

এবার এসো, আমার উত্তপ্ত হৃদয়ে- এক পসলা বৃষ্টি দিতে।

ভিজাবে না আমায়?

তুমি আঁকো, আমি চিলেকোঠায় স্তম্ভ হয়ে পীপিলিকায় মরবার স্বাদ আস্বাদন করি।