শেখ নুর হোসেন'র একগুচ্ছ কবিতা





ঘুমন্ত ঘড়ির ভেতর আটকে থাকা সময়

ধরা পড়ে না, তবু শহরের দেয়ালে ছায়া,
লাল বাস ছুটে চলে স্বপ্নের রাস্তা পেরিয়ে—নিরুদ্দেশে।

চুমু টা এখন একটা শব্দ, ধ্বংস আর রূপকের মাঝে
ভবিষ্যৎ দাঁড়িয়ে আছে বৃষ্টিভেজা ফুটপাথে।

আমি আর তুমি—
ঘুমন্ত ঘড়ির ভেতর আটকে থাকা সময়।

Image

ঘুমের নিচে একটি শহর আছে

ঘুমের নিচে একটি শহর আছে,
যেখানে সব ঘড়ি উল্টো হাঁটে,
পাথর গুলো শ্বাস নেয়—
আর আকাশ, সে কেবল মেঘে চিঠি লেখে।

রাস্তাগুলো কাঁচ দিয়ে তৈরি,
আর মানুষদের ছায়া নেই—
তারা হাঁটে, অথচ পা-জোড়া মাটি ছোঁয় না।
বৃষ্টির বদলে পড়ে স্মৃতি,
যার স্বাদ একেক জনের ভেতর আলাদা।

একটি ছেলেকে দেখি—
তার চোখের ভেতর মাছ সাঁতার কাটে,
আর একটা মেয়ের ঠোঁটে জমে আছে
অপ্রকাশিত ভাষার মানচিত্র।

তুমি যদি চুপ করে থাকো অনেকক্ষণ,
তোমার নিজের নামটাও ভুলে যাবে এই শহরে।
আর তখনই, ঘুম খুলে যাবে—
আর তুমি জেগে উঠবে নিজের ছায়ার ভেতরে।

Image

মানুষ

রক্তে লেখা নয়,
শিরায় শিরায় ছড়ানো ভাষায়—
আমি খুঁজি মানুষ।

নিরীহ চোখে অগ্নিগিরির মতো যে জ্বলে,
বুকে জড়িয়ে রাখে ভাঙা পৃথিবীর মানচিত্র,
সে-ই আমার ঈশ্বরহীন প্রার্থনা।

আমি দল দেখি না—
আমি দেখি, কে ভাত দেয় ক্ষুধার মুখে,
কে কাঁধ বাড়ায় লাশের ওজন ভাগ করতে।

শব্দের গলিঘুঁজিতে
যে মুছে ফেলে জাত, ধর্ম, সীমান্ত—
সে-ই কবিতা, সে-ই বিপ্লব।

মানুষ,
তোমার নামেই শুরু হোক প্রতিটি দিন,
আর শেষ হোক ভালোবাসার ধূপকাঠিতে।

Image